দীর্ঘ দুই সপ্তাহের ব্যাপক ধ্বংসাত্মক ও প্রাণঘাতী অভিযানের পর অবশেষে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার বৃহত্তম আল-শিফা হাসপাতাল থেকে সৈন্যদের প্রত্যাহার করে নিয়েছে ইসরায়েল। ভবনের ধ্বংসাবশেষ আর আবর্জনার মাঝে ফিলিস্তিনের ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা মরদেহ রেখে ইসরায়েলি সৈন্যরা হাতপাতালটি ত্যাগ করেছে।
সোমবার (১ এপ্রিল) ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর এক বিবৃতিতে সৈন্যদের প্রত্যাহারের তথ্য জানানো হয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি সৈন্যরা চলে যাওয়ার পর শত শত বাসিন্দা গাজা উপত্যকার বৃহত্তম হাসপাতালের আশপাশে ছুটে আসেন। ইসরায়েলি সৈন্যদের সাথে গাজার ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী হামাসের দীর্ঘদিনের সংঘাতের ক্ষয়ক্ষতির চিত্র দেখতে সেখানে হাজির হয়েছেন আশপাশের বিভিন্ন আবাসিক জেলার বাসিন্দারা।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে, দুই সপ্তাহের অভিযান চলাকালীন হাসপাতাল এলাকায় সংঘর্ষে কয়েকশ’ বন্দুকধারীকে হত্যা ও আটক করা হয়েছে। এছাড়া হাসপাতাল থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোয়েন্দা নথিও জব্দ করেছে তারা। তবে হামাস ও চিকিৎসাকর্মীরা আল-শিফা হাসপাতালে ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের সশস্ত্র উপস্থিতির বিষয়টি অস্বীকার করেছে।
গাজার বেসামরিক জরুরি সেবাবিভাগের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ইসরায়েলি বাহিনী দু’জনকে এমনভাবে হত্যা করেছে; যাদের মৃতদেহ ধ্বংসস্তূপের মাঝে হাতকড়া পরা অবস্থায় পাওয়া গেছে। ইসরায়েলের সৈন্যরা হাসপাতাল চত্বরে কবর দেওয়া মৃতদেহগুলো বুলডোজার ব্যবহার করে উত্তোলন করেছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া আল-শিফা হাসপাতাল এলাকার কিছু ভিডিওতে দেখা যায়, হাসপাতালের ধ্বংসস্তূপের মাঝে ও চত্বরে অনেক ফিলিস্তিনির মরদেহ পড়ে আছে। কিছু কিছু মরদেহ নোংরা কম্বলে ঢেকে রাখা হয়েছে।
ছবিতে দেখা যায়, হাসপাতাল ভবন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ভবনের বাইরে মাটি খুঁড়ে গভীর গর্ত করা হয়েছে। কোনও ভবনই অক্ষত নেই। হয় পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে নতুবা মাটিতে মিশিয়ে ফেলা হয়েছে।
আল-শিফা হাসপাতাল দেখতে যাওয়া সামির বাসেল নামের এক ব্যক্তি বলেন, আমি এখানে পৌঁছানোর পর আমার কান্না থামাতে পারিনি। দখলদার বাহিনী এখানে ভয়াবহ গণহত্যা চালিয়েছে। এলাকাটি ধ্বংস করা হয়েছে। ভবনগুলো পুড়িয়ে ফেলেছে অথবা গুঁড়িয়ে দিয়েছে। এই স্থানটি পুনরায় নির্মাণ করা দরকার। এখানে শিফা হাসপাতালের কোনও অস্তিত্ব নেই।