জানুয়ারি ১৫, ২০২৪ ১২:১৪ অপরাহ্ণ
ক্যারিয়ারের বেশি দূর যেতে পারেননি নতুন প্রজন্মের মডেল তানজিম তাসনিয়া। শুরু থেকেই জড়িয়েছেন নানা বিতর্কে। ব্ল্যাকমেইল করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া, প্রতারণা ও মিথ্যা মামলায় অন্যকে ফাঁসানোর অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
গত ৫ জানুয়ারি রাজধানীর ধানমন্ডির বাসা থেকে মডেল তাসনিয়ার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয় ‘আত্মহত্যা’ করেছেন তাসনিয়া। তার এই মৃত্যু নিয়ে শোবিজ অঙ্গনে চলছে নানা আলোচনা। অনেকে বলছেন, বেপরোয়া ও বিলাসী জীবনযাপনের নিয়ন্ত্রণ টানতে না পেরে এ করুণ পরিণতি হয় তাসনিয়ার।
গত বছর যখন তার বিরুদ্ধে একের পর এক প্রতারণা ও মিথ্যা মামলা দিয়ে আর্থিক সুবিধা নেয়ার বিষয়টি পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে আসে, তখন তার ব্যক্তিগত জীবনের নানা বিতর্কিত বিষয় নিয়ে ফেসবুক লাইভে ও কয়েকটি অনলাইন মাধ্যমে কথা বলেন তাসনিয়া। এসব লাইভে তাসনিয়া প্রকাশ করেন তার সঙ্গে কার কার সম্পর্ক ছিল এবং কাদের কাছ থেকে তিনি আর্থিক সহায়তা নিয়েছেন।
তদন্তে উঠে আসে ২০২০ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি গুলশান থানায় এক বড় ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করেন তাসনিয়া। পরবর্তীতে পিবিআইয়ের তদন্তে মিথ্যা প্রমাণিত হয় এই মামলা। প্রকাশ পায় তারা বেশ কয়েক বছর ধরে প্রেম করছিলেন।
এ ঘটনার মাত্র চার মাস পর, একই বছরের ৭ সেপ্টেম্বর আরেক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে পর্ন ছবি ছড়ানোর অভিযোগে সাইবার আইনে মামলা করেছিলেন তাসনিয়া। কিন্ত সিআইডির তদন্তে বেরিয়ে আসে ঐ ব্যবসায়ীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল তার। করেছেন বিদেশ ভ্রমণও। বিভিন্ন সময়ে তার কাছ থেকে অন্তত ২০ লাখ টাকা নেন তাসনিয়া। পরবর্তীতে মিথ্যা মামলা করেন।
সিআইডির তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, তাসনিয়া পেশাদার ব্ল্যাকমেইলিংয়ে জড়িত। মূলত ধনাঢ্য পুরুষদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ব্ল্যাকমেইল করে হাতিয়ে নিতেন লাখ লাখ টাকা। পিবিআইয়ের তদন্তেও উঠে আসে একই চিত্র।
এছাড়া শোবিজ অঙ্গনের আরেক মডেল ইশরাত পায়েলের স্বামীর সঙ্গেও সম্পর্কে জরিয়েছিলেন তাসনিয়া। এ বিষয়ে ইশরাত পায়েলের সঙ্গে বাকবিতণ্ডার একটি ফোন রেকর্ড ফাঁস করেন তিনি। সেই সঙ্গে পায়েল দেশে ফিরলে তাকে দেখে নেয়ারও হুমকি দেন।
এসব তথ্য সংবাদমাধ্যমে প্রকাশের পর, গেল বছর নির্মাতা জসীম আহমদকে ফোন রেকর্ড ছড়ানোর জন্য অভিযুক্ত করে তাদের মধ্যকার ২০২০ সালের একটি পুরনো মামলাকে সামনে নিয়ে এসে অনলাইনে বক্তব্য দেন তাসনিয়া। এ সময় জসীম আহমেদের আইনজীবী ব্যারিস্টার শাহেদুল আজম বলেন, তাসনিয়া ধনাঢ্য ব্যক্তিদের টার্গেট করে ব্ল্যাকমেইল করতেন।
একের পর এক বিতর্কে জরানোর পর বেশ কিছুদিন ধরেই তাসনিয়া রহমান তার ফেসবুক ও ইন্সটাগ্রাম আইডি ডিঅ্যাক্টিভ করে আড়ালে চলে যান। সম্প্রতি আশিম খন্দকার নামে ইউল্যাবের এক ছাত্রের সঙ্গে ‘লিভ ইন রিলেশনে’ ছিলেন তাসনিয়া। কিন্তু সংবাদমাধ্যমে তাসনিয়ার নানা অপরাধ প্রকাশ্য আসতেই আশিম তাকে ছেড়ে গেলে লাইভে এসে আত্মহত্যার ঘোষণা দেন তিনি।
লাইভে আশিম সম্পর্কে তাসনিয়া বলেন, আশিমের সঙ্গে আমার একটা বাসা নেয়া ছিল। এখান আশিম দায়িত্ববোধ থেকে সরে গেছে। আমরা ঠান্ডা মাথায় কথা বলতে গেছিলাম, কিন্তু আশিম পুরো দায়িত্ব থেকে সরে গেছে। আমাদের তো স্বামী-স্ত্রী হিসেবে চুক্তি আছে। আমি এটা তার ভাই আর মাকেও বুঝিয়েছি। কিন্তু তারা কোনো সাহায্য করেনি।