প্রতিবেদন, মো. হাবিবুর রহমান:
রোজার মধ্যে এক সপ্তাহের ব্যবধানে কল, আলু, জিরা, রসুনসহ বেশ কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে। একই সময়ে পেঁয়াজ, ব্রয়লার মুরগি, মসুর ডাল, ডিম ও কিছু সবজির দাম কমেছে। দাম কিছুটা কমলেও এসব পণ্য এখনো অধিকাংশ ক্রেতার নাগালের বাইরে। টিসিবির প্রতিবেদন বলছে, শুধু ডিম, দেশি রসুন ও দেশি পেঁয়াজ ছাড়া বাকি সব পণ্য নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে।
শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার, আগারগাঁও, রামপুরা, মালিবাগ, শেওড়াপাড়া, মোহাম্মদপুরসহ বেশ কয়েকটি পাইকারি ও খুচরা বাজার ঘুরে এবং ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, গত সপ্তাহে প্রতি কেজি ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম ছিল যথাক্রমে ২৩০ ও ৩৪০ টাকা। এ সপ্তাহে যা বিক্রি হচ্ছে ২১০ টাকা ও ৩১০ টাকায়। অথচ সরকার নির্ধারিত ব্রয়লার মুরগির দাম ১৭৫ টাকা ও সোনালি মুরগির দাম ২৬২ টাকা।
এছাড়া খুচরা বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৬৬৫ টাকা বিক্রি হওয়ার কথা। তবে বাজারে ঘুরে দেখা গেছে, ৭৫০-৭৮০ টাকা কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে। উত্তর শাহজাহানপুরের খলিল গোশত বিতানে রোজা শুরুর দিন থেকে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৫৯৫ টাকা বিক্রি করা হচ্ছিল। তবে সেই দোকানেও দাম বাড়ানো হয়েছে। সেখানে এখন গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৬৯৫ টাকায়।
একইভাবে খুচরা পর্যায়ে মসুর ডাল (মোটা) ১০৫ টাকা ৫০ পয়সা, পাঙাশ মাছ (চাষের) প্রায় ১৮১ টাকা, কাতল মাছ (চাষের) প্রায় ৩৫৪ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ৬৫ টাকা ও আলু ২৯ টাকায় বিক্রির নির্দেশনা দেয় কৃষি বিপণন অধিদফতর। কিন্তু বাজারে এসব পণ্য বিক্রি হচ্ছে ৫ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বেশি দামে।
এদিকে রোজার আগে দাম স্থিতিশীল থাকলেও এখন হঠাৎ করে তা বাড়তে শুরু করেছে। এক সপ্তাহের মধ্যে প্রতি কেজি চালের দাম ১-৩ টাকা বেড়েছে। যেমন মাঝারি জাতের পাইজাম চাল কেজিতে ৩ টাকা বেড়ে ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে আলুর দাম নতুন করে কেজিতে ৫-১০ টাকা বেড়েছে। এক সপ্তাহ আগে প্রতি কেজি আলু ৩০-৩৫ টাকায় বিক্রি হতো; এখন বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকায়। কৃষি বিপণন অধিদফতর আলুর দাম নির্ধারণ করেছে প্রতি কেজি ২৮ টাকা ৫৫ পয়সা।
এছাড়া বেড়েছে আমদানি করা রসুন ও জিরার দাম। রসুনের দাম কেজিতে ১০-১৫ টাকা বেড়ে হয়েছে ২০০ টাকা। আর জিরার দাম কেজিতে ৫০ টাকা বেড়ে ৮০০ টাকা হয়েছে।
গত সপ্তাহে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল ৯০ থেকে ১০০ টাকায়। এরপর বাজারে নতুন হালি পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়লে দাম কমে ৪৫ থেকে ৫০ টাকায় নেমে আসে। গত দুই দিনে দেশি পেঁয়াজের দাম আবার বেড়ে ৫৫ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
চলতি সপ্তাহে ফার্মের মুরগির বাদামি ডিম বিক্রি হয় প্রতি ডজন ১২০ টাকায়। সপ্তাহখানেক আগে যা ছিল ১২৫ থেকে ১৩০ টাকা।
রোজার শুরুতে আরো কয়েকটি পণ্যের দাম কিছুটা কমেছে। যেমন- মানভেদে প্রতি হালি লেবু ৮০ থেকে ১০০ টাকা, টমেটো, শসা ও বেগুনের দামও কেজিতে ১৫-৩০ টাকা কমেছে।