রিপোর্টার্স২৪ডেস্ক: ভেঞ্চার ক্যাপিটাল প্রতিষ্ঠান ‘এসবিকে টেক ভেঞ্চারস লিমিটেড’-এর সিইও সোনিয়া বশির কবিরের বিরুদ্ধে দেশ-বিদেশের অন্তত ৮০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। বিনিয়োগ বা শেয়ার দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা নেওয়ার পর তিনি আত্মগোপনে চলে গেছেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ভুক্তভোগী ইতোমধ্যে দেশে ও বিদেশে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। কয়েকটি মামলার তদন্ত শেষ করে পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্রও দিয়েছে। ঢাকার বিভিন্ন আদালতে দায়ের হওয়া এসব মামলার কিছুতে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে সোনিয়া কবিরের নামে।
গত ১২ জানুয়ারি জেরিন চৌধুরী নামে এক ব্যবসায়ী সোনিয়া কবিরের বিরুদ্ধে মোট ২ কোটি ৯ লাখ ৩৩ হাজার টাকার আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করেন। অভিযোগে বলা হয়, ২০২১ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ‘হিসাব প্লাস ডটকম লিমিটেড’ ও ‘এসবিকে টেক ভেঞ্চারস’-এর শেয়ার এবং লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন ব্যাংকের মাধ্যমে একাধিক দফায় তাঁর কাছ থেকে টাকা নেন সোনিয়া কবির।
মামলাটি তদন্ত করে পিবিআই ঢাকা মেট্রো দক্ষিণ। তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক এস এম আশরাফুল আলম আদালতে দাখিল করা প্রতিবেদনে ব্যাংক লেনদেনসহ অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন বলে উল্লেখ করেন। একই সঙ্গে সোনিয়াকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। মামলাটি বিচারাধীন।
এ ছাড়া ব্যবসায়ী তানভীর ইসলাম গত জানুয়ারিতে সোনিয়া কবিরের বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা করেন। তিনি অভিযোগ করেন, বিনিয়োগ ও ঋণের নামে মোট ৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা নেওয়ার পর সোনিয়া কবির তা ফেরত দেননি; বরং বিভিন্ন সময় ভয়ভীতি দেখিয়ে মামলা না করতে চাপ সৃষ্টি করেছেন।
এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পরিদর্শক তরিকুল ইসলাম জানান, সোনিয়া কবিরের প্রতারণার প্রমাণ পাওয়ায় আদালতে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে।
এসবিকে টেক ভেঞ্চারসের বিরুদ্ধে এক সাবেক সেনা কর্মকর্তার ১৫ কোটি টাকা এবং ফাইবার হোম লিমিটেডের ১২ কোটি টাকা বকেয়া রাখার অভিযোগ রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি মূলধন সংগ্রহ করে স্টার্টআপে বিনিয়োগ করার কথা বললেও একপর্যায়ে বিনিয়োগ না করে উল্টো প্রতারণার পথেই গেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
গত অক্টোবরে স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠান মার্কোপোলো, ফসল, যাত্রী, ১০ মিনিট স্কুল, অরোগা ও সোলশেয়ারও চুক্তিভঙ্গ ও প্রতারণার অভিযোগ তোলে এসবিকে টেকের বিরুদ্ধে।
তদন্তে আরও জানা গেছে, সোনিয়া কবির বিদেশেও অনুরূপ প্রতারণা করেছেন। সিঙ্গাপুরভিত্তিক ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফার্ম ডিআইভিসি-র সঙ্গে ১৫ লাখ ডলারের শেয়ার বিক্রির চুক্তি করে সে টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটি সিঙ্গাপুরে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করেছে।
বক্তব্য নিতে সোনিয়া কবিরের গুলশানের অফিস ও বারিধারার বাসায় যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। তাঁর মোবাইলে ফোন ও বার্তা পাঠিয়েও সাড়া পাওয়া যায়নি। অফিসের একজন সহকর্মী জানিয়েছেন, তিনি বর্তমানে দেশের বাইরে আছেন। পুলিশ জানিয়েছে, এনআই অ্যাক্টে দায়ের হওয়া মামলায় গুলশান থানায় তাঁর নামে দুটি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে।
রিপোর্টার্স২৪/বাবি